১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আবহমান বাংলাদেশ' বিষয়ে পিতা ও কন্যার সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) নিচের উদ্দীপক অনুসরণ করে একটি খুদে গল্প লেখ।
হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। খালের ধারের আমগাছটার নিচে বসে আছে আয়মান। হঠাৎ পিছনে কারো পায়ের শব্দ শুনে চমকে উঠলো সে।....
(ক) উত্তরঃ
বাবা : কোথায় যাচ্ছিলে মা?
তানিয়া : চন্দনাদের বাড়িতে বাবা।
বাবা : হঠাৎ ওদের বাড়িতে কেন?
তানিয়া : না, মানে, ওদের বাড়িতে আজ পূজা তো.., আমাকে দাওয়াত করেছে?
বাবা : কী বললি? তুই পূজার দাওয়াতে যাচ্ছিস? মুসলমানের মেয়ে হয়ে হিন্দুদের পূজাতে যাচ্ছিস তুই?
তানিয়া : তাতে তো কোনো সমস্যা থাকার কথা নয় বাবা। এক ধর্মের মানুষের সঙ্গে কি অন্য ধর্মের মানুষের বন্ধুত্ব হতে পারে না?
বাবা : তা পারে।
তানিয়া : তাহলে কি একজন বন্ধু তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অন্য বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করতে পারে না?
বাবা : পারে। কিন্তু মুসলমান হয়ে হিন্দুদের পূজাতে যাওয়া হারাম। তুই ওখানে যেতে পারবি না।
তানিয়া : কেন বাবা? এই দেশে আমরা যারা বাস করছি, তাদের সবাই বাঙালি । একের উৎসব মানে সবার উৎসব। এই উৎসবকে তুমি কেন সম্প্রদায়ের সাথে মিলিয়ে নিচ্ছ? আমাদের ঈদের দিনে কি ওরা আসে না?
বাবা : তা আসে।
তানিয়া : তাহলে আমি গেলে সমস্যা কোথায়? আমাদের সমস্যাটা এখানেই। আমরা জাতি-ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠতে পারি না। এই সাম্প্রদায়িক গণ্ডি অতিক্রম করতে না পারা পর্যন্ত আমাদের অধঃপতন হতেই থাকবে। আর আমি হিন্দু ধর্ম পালন করার জন্য যাচ্ছি না, ওদের ধর্ম ওরা পালন করবে, আমি যাচ্ছি শুধু সামাজিক দায়িত্ব ও বন্ধুত্বের সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য।
বাবা : তুই কি আমাকে জ্ঞান দিচ্ছিস?
তানিয়া : না বাবা। তোমাকে জ্ঞান দেয়ার মতো জ্ঞান আমার হয়নি। আমি শুধু বোঝাতে চাচ্ছি, ধর্ম হলো মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের এক গোপন অনুভূতি। কিন্তু সমাজ অন্য জিনিস। সমাজে চলতে গেলে নানা ধর্মের মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকতে হয়। একের উৎসবে অপরকে যেতে হয়। আমি এখন যাই বাবা। তোমার সাথে পরে এসে কথা বলব।
(খ) উত্তরঃ'
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর...’
হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। খালের ধারের আমগাছটার নিচে বসে আছে আয়মান। হঠাৎ পেছনে কারও পায়ের শব্দ শুনে চমকে উঠল সে। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। মৃদু শীতের হাওয়া। কার পায়ের শব্দ? কে আসতে পারে এ পড়ন্ত বিকেলে খালের ধারে। আয়মান ভেবে অস্থির। কিন্তু পাশ ফিরে তাকিয়ে সে কাউকে দেখতে পেল না। সন্ধ্যার পরে সে এখান থেকে উঠে বাড়ির দিকে রওয়ানা হবে। সন্ধ্যা হতেও বেশি দেরি নেই। কিন্তু মন অস্থির। কেন যেন তার কিচ্ছু ভালো লাগছে না। বিষণ্ণতায় হৃদয় যে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি যেন একদম নিশ্চুপ- তার মতোই মন ভার করে স্থির বসে আছে। ক্ষুধা-তৃষ্ণা যেন দূর হয়ে গেছে তার। দূর থেকে পাখিরা উড়ে এসে নীড়ে ঢুকে পড়ছে। আকাশের লাল আভা শেষ মুহূর্তের আলোকিত পৃথিবীকে উঁকি মেরে বিদায় জানাচ্ছে। আয়মান তবুও উদাস। বাড়ি ফেরার কোনো আগ্রহ নেই। হঠাৎ আবার আনমনে সে পেছনে ফিরে তাকিয়ে চারপাশ দেখে নিল। আবার তার মনে হয় কে যেন তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু তাকে সে দেখতে পাচ্ছে না। অস্থিরতা ছুঁয়ে যাচ্ছে তার প্রতিটি লোমকূপ। দীর্ঘশ্বাসে কেঁপে উঠছে খালের স্বচ্ছ জল। মাটির বুক ফেটে সোঁদা গন্ধ যেন ডুকরে কেঁদে বের হয়ে আসছে। আয়মান কী করবে এখন। বিশাল এই পৃথিবীর আলো- বাতাস, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ, খাল-বিলে ফুটে থাকা পদ্ম ও শাপলার সমারোহ তার কাছে তুচ্ছ মনে হচ্ছে। আয়মান কার জন্য যেন অপেক্ষা করছে এখানে বসে। কিন্তু তার অপেক্ষার যেন কোনো অবসান নেই।
অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। আকাশে চাঁদ নেই। কিন্তু এত তারা ফুটেছে আজ আকাশে! হঠাৎ ঝিরি ঝিরি বাতাসে বকুলের গন্ধ ভেসে এসে আয়মানকে ছুঁয়ে গেল। প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিল আয়মান। অদূরেই একটি লেবু বাগানে হাজার হাজার জোনাকি আলো জ্বেলে যেন উৎসবে মেতে উঠেছে। আয়মান উঠে দাঁড়াল, বুক ভরে সে আরও একটা নিশ্বাস নিল। তারপর আকাশের দিকে তাকাল। পাশ ফিরে দেখল লেবু বাগানে জোনাকির মেলা। বাতাসে বহমান বকুলের গন্ধ তার শরীর ও মনে যেন আনন্দের জোয়ার বইয়ে দিল। মুগ্ধ দৃষ্টিতে আয়মান বিষন্নতা ভুলে বাংলার রূপ দেখতে শুরু করল। জীবনানন্দ দাশের সেই কবিতা তার মুখ থেকে সহসা বের হতে শুরু হলো- 'বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর...'
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) 'নিরাপদ সড়ক চাই' বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত সংকেত অনুসরণে 'রক্তদানের পূণ্য' শিরোনামে একটি খুদেগল্প রচনা কর।
মহান শহিদ দিবসে শহিদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ডা. সাদমান সেখানে উপস্থিত হলেন ...
(ক) বই মেলা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) হারানো শিশু ও পথচারীর মাঝে একটি সংলাপ তৈরি কর।
(ক)
সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপরচনা কর।
অথবা,
(খ) 'একতাই বল' শিরোনামে একটি খুদে গল্প রচনা কর।