১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) 'নিরাপদ সড়ক চাই' বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত সংকেত অনুসরণে 'রক্তদানের পূণ্য' শিরোনামে একটি খুদেগল্প রচনা কর।
মহান শহিদ দিবসে শহিদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ডা. সাদমান সেখানে উপস্থিত হলেন ...
(ক) উত্তরঃ
সুমন : কী রে বন্ধু কেমন আছিস? ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন কি থেমে গেল নাকি?
সুজন : আছি ভালোই। না রে দোস্ত থামেনি তবে গতি একটু কমে এসেছে আর কি! তোর খবর কী?
সুমন : আমার খবর ভালো। কিন্তু পত্রিকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পড়ে মনটা ভালো নেই।
সুজন : আট জন নিহত! ভাবা যায়? প্রতিদিনই বাড়ছে এই দুর্ঘটনা।
সুমন : হ্যাঁ, এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে দেশে প্রতিদিন গড়ে তিন জন করে বছরে এক হাজারের বেশি লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় এবং পঙ্গু হয় বছরে ৫ থেকে ১০ হাজার লোক।
সুজন : সড়ক দুর্ঘটনা কী যে হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক তা কল্পনাও করা যায় না।
সুমন : ঠিকই বলেছিস। সেদিন নিজের চোখে দেখেছি এক ভয়াবহ দৃশ্য। আমি আর রাজু তো একজনকে টেনে বের করলাম খাদে পড়া বাস থেকে। দেখলাম লোকটার একটা হাত কেটে আলাদা হয়ে গেছে।
সুজন : এমন ভয়াবহ দৃশ্য প্রতিদিন কাউকে না কাউকে দেখতে হচ্ছে।
সুমন : হ্যাঁ। এর ফলে আমরা হারাচ্ছি আত্মীয়স্বজন, মেধাবী মুখ, প্রিয় মানুষকে। কিন্তু আমরা এই দুর্ঘটনা রোধে সচেষ্ট নই।
সুজন : সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যু বড় অস্বাভাবিক এবং খুবই বেদনাদায়ক। অথচ আমরা এ ব্যাপারে উদাসীন বলেই মনে হয়।
সুমন : এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিরুদ্ধে আমাদের গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সুজন : নিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছাত্র-শিক্ষকসহ সকলকেই সচেতন করে তুলতে হবে।
সুমন : হ্যাঁ, তা ঠিক। তবে সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন প্রতিরোধে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।
সুজন : শুধু তাই নয়, দক্ষতাহীন অপ্রাপ্তবয়স্কদের লাইসেন্স প্রদান, শ্রমিক দৌরাত্ম্য কমাতে এবং ট্রাফিক আইন পালনেও তাদের কার্যকর কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সুমন :প্রশাসন ও জনগণের মিলিত শক্তিই ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন সফল করতে পারে।
সুজন : এ জন্য আমাদের সকলেরই উচিত নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যকেও সচেতন করা।
সুমন : এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মিডিয়া গণসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড, বিজ্ঞাপন, ডকুমেন্টারি ফিল্ম ইত্যাদি তৈরি করে প্রচারাভিযান চালাতে পারে।
সুজন : আমারও মনে হয় সবাই সচেতনভাবে এগিয়ে এলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
সুমন : তুই ঠিকই বলেছিস। চল সবাই মিলে সচেতনভাবে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
(খ) উত্তরঃ
‘‘রক্তদানের পুণ্য’’
মহান শহীদ দিবসে শহীদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ডা. জাওয়াদ সেখানে। উপস্থিত হলেন। সেখানে দেখলেন অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের একটি সংগঠন কর্মসূচি পরিচালনা করছে। ডা. জাওয়াদ এ সংগঠনের একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি পাঁচবার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন।
ডা. জাওয়াদের স্বেচ্ছায় রক্তদানের শুরুটা ছিল অন্যরকম। এখনো তার স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে প্রথম রক্তদানের ঘটনা। তখন ডা. জাওয়াদ ফাইনাল সেমিস্টারের ছাত্র। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হোস্টেল থেকে বের হতেই পেছন থেকে কেউ একজন ডাক দিলো, “বাবা শুনছ"। পেছন ফিরতেই চোখে পড়ল পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা। উদ্ভ্রান্তের মতো চোখ, একটি মলিন শাড়ি পরা মহিলাটিকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কোনো অজানা বেদনায় বুকে পাথর চাপা দিয়ে আছে। চোখে মুখে সেই বেদনার ছাপ স্পষ্ট। ঘুরে দাঁড়াতেই মহিলাটি দ্রুত পায়ে ব্যস্তভাবে ডা. জাওয়াদের দিকে এগিয়ে এলো। জাওয়াদ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই বলে উঠল, “বাবা, আমার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলেছে যত দ্রুত সম্ভব রক্তের ব্যবস্থা করতে। কোথায় যাব? কী করব? কিছুই বুঝতে পারছি না। একজন বলল ওই হোস্টেলের গেটে গিয়ে খোঁজ করেন। অনেক ছাত্রই রক্ত দেয়। কিন্তু সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। কেউ রাজি হচ্ছে না। ছেলেটা আমার লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত, রক্ত দিতে না পারলে বাঁচবে না...” বলতে বলতেই কেঁদে ফেলল মহিলাটি। ডা. জাওয়াদ জিজ্ঞেস করলো, “কোন গ্রুপের রক্ত লাগবে?” মহিলাটির সরল উত্তর, “এ নেগেটিভ।” ডা. জাওয়াদের রক্তের গ্রুপ ‘এ নেগেটিভ।’ কিন্তু তিনি কখনো রক্ত দেননি। আর তাছাড়া একটু পরেই তার পরীক্ষা শুরু হবে। মহিলাটির মলিন মুখ দেখে তার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। মনে মনে ভাবেন, ‘আমার যদি এমন হতো তাহলে আমার মা-ও তো এভাবে ছুটে বেড়াতেন। যদি মা এভাবে ঘুরে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারেন তাহলে মায়ের মনের হাহাকার কে শুনবে?’ ভাবতেই চোখের কোণে অশ্রু জমে যায় ডা. জাওয়াদের। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন তিনি মহিলার সাথে রক্ত দিতে যাবেন।
রক্ত দিয়ে একটি রিকশা নিয়ে পরীক্ষার হলের উদ্দেশ্যে রওয়া দিলেন তিনি। চোখের সামনে বার বার ভেসে উঠছিল রক্ত যোগাড় করতে পারার আনন্দে তৃপ্ত একজন মায়ের মুখ। পরীক্ষার হলে যতক্ষণে পৌঁছলেন ততক্ষণে একঘণ্টা শেষ। হলে ঢুকতেই দায়িত্বরত শিক্ষক বললেন, “পরীক্ষার হলে আসতে এত দেরি কেন?” ডা. জাওয়াদ শিক্ষককে সব খুলে বললেন। শিক্ষক সব শুনে খাতা দিলেন আর বললেন, “তুমি তিন ঘণ্টা পরীক্ষা দেবে। প্রয়োজনে আমি একাই তোমার পরীক্ষা নেব।” সেদিন থেকে ডা. জাওয়াদ সিদ্ধান্ত নিলেন নিয়মিত রক্ত দেবেন। শহীদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচিতে দেখলেন স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য দীর্ঘ লাইন। ডা. জাওয়াদের চোখে একটা আনন্দের ঝিলিক খেলা করে গেল । মনে ভেসে উঠল অসংখ্য মায়ের মুখ।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) বই মেলা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) হারানো শিশু ও পথচারীর মাঝে একটি সংলাপ তৈরি কর।
(ক) ইন্টারনেটের সুফল ও কুফল নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কথোপকথন রচনা করো।
অথবা,
(খ) 'রক্তঝরা ফাগুন' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ ।
(ক) এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ লেখ।
অথবা,
(খ) নিম্নোক্ত ইঙ্গিত অবলম্বনে একটি খুদে গল্প লেখ।
সকাল থেকেই আকাশে ঘন কালে মেঘ, টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। এর মধ্যেই জরুরি কাজে আনিস রাস্তায় নামল...