৮.দিনলিপি/প্রতিবেদন-১০
(ক)
তোমার কলেজে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের একটি দিনলিপি প্রস্তুত কর।অথবা,
(খ) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) উত্তরঃ
১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
রাজশাহী।
ভোর পাঁচটায় ঘুম ভেঙে গেল। মা উঠে গেছেন আগেই। নাশতা তৈরি করছেন। আমাকে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে বললেন। আজ বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নয় মাস ধরে মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ শত্রুমুক্ত হয়। এই দিন চূড়ান্ত পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কাজেই আজকের দিনটি বাঙালি জাতির জন্য পরম পবিত্র ও তাৎপর্যময় দিন।
আমাদের কুমুদিনী কলেজ থেকে সকাল ৬টায় বিজয় র্যালি বের হবে। আমি যথাসময়ে পৌঁছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান মুখর বিজয় র্যালিতে অংশ নিলাম। শহরের মূল সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয় র্যালি আবার কলেজ গেটে এসে থামল। আমরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করলাম। সেখানে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করলাম। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া প্রার্থনা করা হলো। পাশেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংবলিত চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়। ছবিগুলো সংগ্রহ করেছে ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা’। এতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চ এর ভাষণ, ২৫ শে মার্চের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ, পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসরদের হত্যাযজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্মম অত্যাচার, নারীর সম্ভ্রম হরণ, নির্যাতন, গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন ও হত্যাযজ্ঞের দৃশ্য, পরাজিত পাকিস্তানি সেনাদের পিছু হটে যাওয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন, খন্ডযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন বৈঠক, এলাকাবাসীর সর্তক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে চিত্রগুলো চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠল। সেগুলো অপূর্ব দীপ্তি ছড়াল হৃদয় জুড়ে।
সকাল ৯টায় কলেজ মিলনায়তনে শুরু হলো আলোচনা সভা। পর্যাক্রমে দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি হলো। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জেলা প্রশাসক, টাঙ্গাইল, বিশেষ অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও সাহিত্যিক ডা.মাহবুব সাদিক, কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ কাদির ও কবি বুলবুল খান মাহবুব। তাঁদের তথ্যনির্ভর ও জ্ঞানগর্ভ আলোচন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আমি একটি পূর্ণ ধারণা লাভ করলাম। আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করছিল কলেজের ছাত্রীরা। আমিও কবি শামসুর রহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেছি। মিলনায়তনের দর্শক-শ্রোতারা দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছিল। এই উজ্জীবিত হৃদয় দেশ ও জাতির কল্যাণে অকৃপণভাবে নিবেদিত হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার সংগ্রামে দৃপ্ত সৈনিক হওয়ার আহবান জানিয়ে অধ্যক্ষ মহোদয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন। বাসায় ফিরে এসে মাকে আমার অনুভুতি জানালাম। যাঁরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন তাঁদের মতো দেশপ্রেমিক হতে মা আমাকে আশীর্বাদ করলেন। টিভিতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপভোগ করার পর রাত ১১টায় ঘুমাতে গেলাম।
(খ) উত্তরঃ
‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : জনজীবন বিপর্যস্ত’’
নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজশাহী : ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ : সম্প্রতি একটা বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে চরমভাবে। তা হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি। এ অস্বাভাবিক ও আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। ফলে সমাজে নেমে এসেছে অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগ। এর নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধান করবেন অর্থনীতিবিদগণ। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এ আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ একাধিক। প্রথমত, এমন নৈরাজ্য এদেশে চিরন্তন যে, মুনাফালোভী মজুতদাররা প্রায়ই অধিক মুনাফা অর্জনের মানসিকতায় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি। দেশের একটি ক্ষুদ্রতম অংশ এরূপ ভাতা পেলেও অসুবিধার দায়ভার বহন করে সমাজের বৃহত্তম অংশ। লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, সরকার কর্তৃক মহার্ঘ ভাতা ঘোষণার পরক্ষণেই অজ্ঞাত কারণে বাজারে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকারি কর্মচারীগণ যে হারে মহার্ঘ ভাতা পেয়েছে, দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। ফলত সরকারি কর্মচারীরাও সমস্যামুক্ত হতে পারেনি। তাই অবিলম্বে এ অনাকাঙ্ক্ষিত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এর প্রতিরোধকল্পে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত আবশ্যক।
মূল্যবৃদ্ধি এদেশে এটাই যে প্রথম, তা নয়। এদেশে এটি একটি অনিবার্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত এমন নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টির ঘটনা বিরল। অন্য দেশে এমনটি ঘটলে বিক্ষোভ দানা বাঁধে, সরকারকে জবাবদিহি করতে হয় জনগণের কাছে। কিন্তু এদেশের সরলপ্রাণ মানুষ এরূপ কোনো ঘটনা নিয়ে বেশি মাতামাতি পছন্দ করে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এ জাতীয় সমস্যা তারা এদেশে স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নিয়েছে এবং জনগণ এটাও মনে করে যে, এ বিষয়ে তাদের কোনো দায় নেই।
এ রকম পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস হলেও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে বারবার। আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এসব ঘটনায় কেউ কেউ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে। দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীকে এমন অমানবিক সমস্যাপীড়িত করে যারা নিজেদের সুখ-সম্পদ আহরণের চেষ্টায় মত্ত, তারা দেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। এসব অসৎ ও দুর্নীতিবাজ লোকদের উৎখাত এখন সময়েরই দাবি। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি অভিজ্ঞ মহলের মনোযোগ দেয়া খুবই জরুরি বলে মনে করে সাধারণ জনগণ।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) চা বাগান দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করে দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন সম্পর্কে-প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ কর।
(ক) তোমার কলেজে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন বিষয়ে একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) 'ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) বইমেলা সম্পর্কে দিনলিপি লিখ।
অথবা,
(খ) নির্বাচনি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার দিনের দিনলিপি লেখ।