৮.দিনলিপি/প্রতিবেদন-১০
(ক) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩।
ময়মনসিংহ।
ভোর পাঁচটায় ঘুম ভেঙে গেল। মা উঠে গেছেন আগেই। নাশতা তৈরি করছেন। আমাকে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে বললেন। আজ বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নয় মাস ধরে মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ শত্রুমুক্ত হয়। এই দিন চূড়ান্ত পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কাজেই আজকের দিনটি বাঙালি জাতির জন্য পরম পবিত্র ও তাৎপর্যময় দিন।
আমাদের কুমুদিনী কলেজ থেকে সকাল ৬টায় বিজয় র্যালি বের হবে। আমি যথাসময়ে পৌঁছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান মুখর বিজয় র্যালিতে অংশ নিলাম। শহরের মূল সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয় র্যালি আবার কলেজ গেটে এসে থামল। আমরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করলাম। সেখানে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করলাম। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া প্রার্থনা করা হলো। পাশেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংবলিত চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়। ছবিগুলো সংগ্রহ করেছে ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা’। এতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চ এর ভাষণ, ২৫ শে মার্চের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ, পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসরদের হত্যাযজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্মম অত্যাচার, নারীর সম্ভ্রম হরণ, নির্যাতন, গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন ও হত্যাযজ্ঞের দৃশ্য, পরাজিত পাকিস্তানি সেনাদের পিছু হটে যাওয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন, খন্ডযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন বৈঠক, এলাকাবাসীর সর্তক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে চিত্রগুলো চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠল। সেগুলো অপূর্ব দীপ্তি ছড়াল হৃদয় জুড়ে।
সকাল ৯টায় কলেজ মিলনায়তনে শুরু হলো আলোচনা সভা। পর্যাক্রমে দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি হলো। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জেলা প্রশাসক, টাঙ্গাইল, বিশেষ অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও সাহিত্যিক ডা.মাহবুব সাদিক, কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ কাদির ও কবি বুলবুল খান মাহবুব। তাঁদের তথ্যনির্ভর ও জ্ঞানগর্ভ আলোচন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আমি একটি পূর্ণ ধারণা লাভ করলাম। আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করছিল কলেজের ছাত্রীরা। আমিও কবি শামসুর রহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেছি। মিলনায়তনের দর্শক-শ্রোতারা দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছিল। এই উজ্জীবিত হৃদয় দেশ ও জাতির কল্যাণে অকৃপণভাবে নিবেদিত হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার সংগ্রামে দৃপ্ত সৈনিক হওয়ার আহবান জানিয়ে অধ্যক্ষ মহোদয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন। বাসায় ফিরে এসে মাকে আমার অনুভুতি জানালাম। যাঁরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন তাঁদের মতো দেশপ্রেমিক হতে মা আমাকে আশীর্বাদ করলেন। টিভিতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপভোগ করার পর রাত ১১টায় ঘুমাতে গেলাম।
(খ)
২রা এপ্রিল, ২০২১
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
বিষয় : বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান সম্পর্কিত প্রতিবেদন।
সূত্র : কা.উ.বি. বাক্রী/২০২১/২৭ (০৭)
জনাব,
আমি আপনার আদেশানুসারে কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।
কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
১. ১লা এপ্রিল, ২০২১ কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও এই নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব ছিল বার্ষিক ক্রীড়া উদ্যাপন কমিটির ওপর। কমিটির সদস্যদের একান্ত প্রচেষ্টায় সুন্দরভাবে ক্রীড়ানুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়েছে।
২. এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ। পঁচিশটিরও বেশি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। বিষয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন রকমের দৌড়, লাফ, লৌহগোলক নিক্ষেপ, বর্শা নিক্ষেপ, চাকতি নিক্ষেপ, দ্রুত হাঁটা, সাইকেল দৌড় ইত্যাদি। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক পৃথক বিষয় নির্ধারিত ছিল। ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ এবং আমন্ত্রিত মহিলাদের জন্য ‘বালিশ খেলা’ অনুষ্ঠানটি হয়েছিল বিশেষ উপভোগ্য। পুরুষ অতিথিদের জন্য ছিল হাঁড়িভাঙা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অন্য কর্মচারীদের জন্যও ছিল প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
৩. ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতায় ছেলেদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীর গৌরব লাভ করেছিল দশম শ্রেণির ছাত্র মাহফুজ হাসান এবং মেয়েদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছিল নবম শ্রেণির সাবরিনা আক্তার দোলা।
৪. বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়েছিল সকাল নয়টায়। উদ্বোধন করেছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব আহাদ আলী সরকার। সারাদিন প্রতিযোগিতা চলার পর বিকেল পাঁচটায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন মাননীয় যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিপুলসংখ্যক আমন্ত্রিত অতিথি দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
৫. বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষকের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীরা ক্রীড়ানুশীলনের প্রতি দারুণভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। এ প্রতিযোগিতার পূর্বে বাছাই পর্বে অনেককে বাদ দিতে হয়েছে। তবে ক্রীড়াচর্চায় উৎকর্ষের কিছু অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। বিদ্যালয়ে নিয়মিত খেলাধুলা চর্চার সুযোগ থাকলে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি উৎকর্ষ দেখাতে সক্ষম হতো। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলারও যে প্রয়োজনীয়তা আছে সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া আবশ্যক।
৬. এবারের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উদ্যাপিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠ সাজানো হয়েছিল সুন্দরভাবে। প্রতিযোগীদের কুচকাওয়াজ, তোপধ্বনি, পায়রা ওড়ানো ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকতা সুন্দরভাবে সম্পাদিত হয়েছে। খেলাধুলার পাশাপাশি বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা যে শৃঙ্খলার পরিচয় দিয়েছে তা আজকের দিনে বিরল। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক উদার সহযোগিতা করে প্রতিযোগিতাকে সফল করে তুলেছেন। প্রধান অতিথির ভাষণ ছাত্রছাত্রীদের মনে বহুদিন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
৭. বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের গৌরবজনক ইতিহাসে নতুন মাত্রা সংযোজন করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : তূর্য, দশম শ্রেণি, মানবিক বিভাগ, রোল-৭, কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ১০টা
তারিখ : ২রা এপ্রিল ২০২১
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
No related questions found