৮.দিনলিপি/প্রতিবেদন-১০
(ক) একটি গ্রাম্যমেলা দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করে দিনলিপি রচনা করো।
অথবা,
(খ) 'সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন' শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপনের জন্য একটি ভাষণ প্রস্তুত করো।
(ক) উত্তরঃ
‘গ্রাম্য মেলায় একদিন’
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
রাত ১১টা ৩০ মিনিট
গ্রামের বাড়িতে এসে আজ সারাটা দিন বেশ আনন্দে কেটেছে। সারাদিন হইহুল্লোড় করে এখন খুব ক্লান্ত লাগছে। তবুও লিখতে বসেছি । কারণ সারাদিনই এই আনন্দ অনুভূতিকে যেন কিছুটা হলেও ডায়ারির পাতায় ধরে রাখা যায়। আজ সকালবেলায় চাচাতাে ভাই জুয়েল, আকলিমা আপু, ছােটো বােন সুরাইয়া ও আমি মিলে ঠিক করলাম আমরা ‘সিমপাড়া বাজার মেলায় যাব। যেই কথা, সেই কাজ। সকলে মিলে তৈরি হয়ে মেলায় যাওয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হলাম। সেখানে গিয়ে আমি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলাম। প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে আমরা মেলায় প্রবেশ করলাম। চারদিকের এত চেঁচামেচি, হট্টগােল, ঠেলাঠেলি, হাসি-কান্না, ছােটো ছােটো ছেলেমেয়ের বিস্ময়-বিমুগ্ধ দৃষ্টি, খুশির উচ্ছ্বাস, রং-বেরঙের পােশাক-আশাক— সবকিছু দেখে মনে হলাে আমি যেন এক অন্য জগতে এসে পড়েছি। আমরা সকলে মিলে মেলা ঘুরে দেখতে লাগলাম । ঘুরতে ঘুরতে কানে ভেসে এলাে নাগরদোলার কাচর ক্যাচর শব্দ। আকলিমা আপু, সুরাইয়া ও আমি নাগরদোলায় উঠে বসলাম। আমার বুকের ভেতরে কেমন যেন দুরুদুরু করছিল । আকলিমা আপু আমাকে অভয় দিয়ে আমার হাত চেপে ধরে রাখলেন। এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা নিয়ে নাগরদোলা থেকে নামলাম। তারপর আবার ঘুরতে শুরু করলাম। মেলায় কোথাও খেলনা, কোথাও তালা-কুলা-চালুনি, কোথাও কাঠের জিনিসপত্র, কোথাও মাটির জিনিসপত্র, কোথাও সাজসজ্জার জিনিসপত্র, কোথাও খাবারের জিনিসের দোকান বসেছে। আমি আমার গৃহসজ্জার জন্য কিছু মাটির জিনিস কিনলাম । আকলিমা আপু ও সুরাইয়া সাজসজ্জার বিভিন্ন জিনিস কিনল। জুয়েল ভাইয়াও তার প্রয়ােজনীয় কিছু জিনিস কিনল। অতঃপর আমরা ক্লান্ত হয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হলাম। শরীর ক্লান্ত হলেও সারাদিন খুব আনন্দে কেটেছে। তাই এই দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
(খ) উত্তরঃ
সম্মানিত সভাপতি, আমন্ত্রিত আলোচকবৃন্দ ও সুধীবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বর্তমানে আমাদের দেশে একটি ভয়াবহ জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দেশে কোথাও না কোথাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেই চলেছে। সম্প্রতি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ কোনো গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, সারাদেশ জুড়ে এর সহিংস বিস্তার ঘটেছে। সরকারি অফিস, শিল্প-কারখানা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ব্যক্তিজীবন, রেস্তোরা কিছুই আজ সন্ত্রাসী থাবা থেকে মুক্ত নয়। সন্ত্রাসীদের নির্বিচার অস্ত্রের আঘাত থেকে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ ব্যবসায়ী, বিত্তবান শিল্পপতি, কৃতী অধ্যাপক, লেখক, ব্লগার, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, মন্ত্রী, এমপি এমনকি বিদেশি রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত কেউই রেহাই পাচ্ছে না। বোমাবাজির মতো ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মুহুর্তের মধ্যে ছিনিয়ে নিচ্ছে শত শত মানুষের অমূল্য জীবন, ভেঙে দিচ্ছে তাদের সাজানো সংসার। চারদিকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা এমনভাবে অক্টোপাসের মতো আকড়ে ধরেছে যে ঘর থেকে বের হয়ে ঘরে ফেরা নিশ্চয়তা কারোর নেই। মানুষ আজ সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাসের নগ্ন ছোবল থেকে আজ আর কেউই নিরাপদ নয়। এ কারণে আজ সর্বমহল থেকে দাবি উঠেছে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাই।
সুধীবৃন্দ,
আপনারা অবগত আছেন যে, সন্ত্রাস সম্প্রতি জঙ্গিবাদ নাম নিয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সহিংস সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা ও আত্মঘাতী বোমাবাজি। এই তো কিছুদিন আগে পর্যন্ত অমরা সন্ত্রাসী শব্দটা ব্যবহার করে আসছি ছিচকে ছিনতাইকারী, পটকা ফোটানোওয়ালা, বড়োজোর দাগি খুনি-চাদাবাজদের বোঝাতে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদ বলতে যা বোঝায়। তার কোনো অস্তিত্ব এদেশে ছিল না। এমনকি যখন উদীচীর সম্মেলনে কিংবা ছায়ানটের আসরে বোমা পড়ল, তখনো এটাকে একটা বিচ্ছিন্ন তৎপরতা বলেই অনেকে হালকাভাবে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু যখন বোমা পড়েছে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর, বোমা পড়েছে জাতীয় নেতৃবৃন্দের ওপরে, মাজার, সিনেমা হল, গির্জা, আহমদিয় মসজিদ, গুলশান হোলি আর্টিজান রেস্তোরায়, র্যাবের ক্যাম্পে, আতিয়া মহলে, তখন আমরা কিছুটা সচেতন হয়েছি। বুঝতে পেরেছি আমরা ঢুকে পড়েছি সন্ত্রাসবাদের সর্বনাশা অগ্নিগোলকের ভেতরে। যার ফলে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এদেশ ছেড়ে গেছেন। আর অনেক সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী এদেশে আসাই বন্ধ করে দিচ্ছে।
সম্মানিত সুধী,
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশে সন্ত্রাস ও ও জঙ্গিবাদ যেভাবে বেড়ে যাচ্ছে এতে করে দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সঠিক পথ খুঁজে বের করতে হবে। ঠিক করতে হবে সন্ত্রাস নির্মূলের উপায়। সন্ত্রাসের উৎস ও বিস্তারের কারণ সম্পর্কে গভীরভাবে গবেষণা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এখনই। দলমত নির্বিশেষে রাজনীতিমুক্ত মন নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়ো, দলের চেয়ে দেশ বড়ো। আর সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পরিবার থেকেই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। মা- বাবাকে তাদের সন্তানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, কাদের সঙ্গে মিশছে সবকিছুর প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তাছাড়া ছোটোবেলা থেকে সন্তানকে নৈতিক ও মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। সন্তানকে সময় দিতে হবে এবং তাদের বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তবেই সন্তান বিপদগামী হবে না। সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় করে গড়ে তুলতে হবে, যাতে সমাজে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটতে না পারে।
প্রিয় সুধী,
তাই আসুন আমরা একটা স্বপ্ন দেখি। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আমরাও হব পথিবীর এক সেরা দেশ। যে দেশে থাকবে না সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো চিহ্ন। যেদিন আমরা সত্যিকারে গর্ব করে গাইতে পারব। সকল দেশে সেরা সে যে আমার জন্মভূমি। ধন্যবাদ সবাইকে
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) কলেজে প্রথম দিনের অনুভূতি ব্যক্ত করে একটি দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) তোমার, কলেজ ছাত্রাবাসের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
(ক) চা বাগান দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করে দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন সম্পর্কে-প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ কর।
(ক) 'জাতীয় গ্রন্থমেলায়' কাটানো একটি দিন সম্পর্কে একটি দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) 'যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে করণীয়'- এই সম্পর্কে তোমার মতামত জানিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি কর।