১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) অবকাশে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যকার সংলাপ উপস্থাপন কর।
অথবা,
(খ) 'আশায় বসতি' শিরোনামে নিচের ইঙ্গিত অবলম্বনে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:
বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করে রিপনের মা। রিপনকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার আশা বুকে। হঠাৎ সেদিন...
ক) উত্তর:
সুজন : আমাদের আকাঙ্ক্ষিত গ্রীষ্মের ছুটি অবশেষে পাওয়া গেল । ছুটিতে কোথায় বেড়াতে যাবে ঠিক করেছ?
সুমন : আমি কক্সবাজারে যাব ঠিক করেছি । তুমি কোথায় যাবে?
সুজন : আমি আমার গ্রামের বাড়ি যাব ঠিক করেছি । বাবা-মাও যাবেন ।
সুমন : গ্রামের বাড়ি! গ্রামে তো এ সময় অনেক গরম থাকবে । তাই না?
সুজন : অনেক গরম তা ঠিক । তবে এটিতো বাংলার প্রকৃতির রূপ । এটাকে আমি পছন্দ করি । প্রচণ্ড গরমে অস্থির হয়ে ছেলে-বুড়ো যখন বাড়ির পশ্চিম পাশে বাঁশের মাচায় বসে থাকে এবং খোলা মাঠের হাওয়া শরীরে লাগে তখন শরীর ও মন প্রশান্তিতে ভরে যায় । সকালে-বিকালে নদীর পারে ঘুরতে গেলে নদীর ঠান্ডা বাতাস শরীর জুড়িয়ে দেয় । নদীর দুপাড়ের মনোরম দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায় ।
সুমন : তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে গ্রামের প্রকৃতি সত্যিই খুব আকর্ষণীয় ।
সুজন : হ্যাঁ বন্ধু, তুমি গ্রামে না গেলে প্রকৃতিকে এত কাছ থেকে দেখতে পাবে না ।
সুমন : আমি কখনো গ্রামে যাইনি । অবসরে শুধু দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে যাই ।
সুজন : বন্ধু, আমার দেশের প্রতিটি গ্রামই দর্শনীয় ও উপভোগ্য । গ্রীষ্মের দুপুরে নিস্তব্ধ পুকুর পাড়ে বসে থাকার যে কী মজা! গাছ থেকে পাকা আম পেরে খাওয়া, কাঁচা আমের ভর্তা খাওয়া, পাকা জাম ঝেঁকে খাওয়া, আনারস, কাঁচামরিচ ও লবণ দিয়ে মেখে খাওয়ার যে কী মজা!
সুমন : তোমার কথা শুনে কিন্তু আমার লোভ হচ্ছে ।
সুজন : লোভ দেখানোর জন্যই তো বলছি । চলো না বন্ধু এক সাথে গ্রামের বাড়ি যাই ।
সুমন : মা রাজি হবেন কি না জানি না!
সুজন : খালাম্মাকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার । চলো তার কাছে যাই ।
সুমন : চলো যাই ।
খ) উত্তরঃ
আশায় বসতি
বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করে বাবুলের মা। বাবুলকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার আশা বুকে। হঠাৎ একদিন হনহন করে কোমরে কাপড় গুঁজতে গুঁজতে হেঁটে আসতে দেখা গেল আকলিমা খাতুনকে। দূর থেকে কে যেন মিহি গলায় ডাক দিল তাকে, 'ও বাবুলের মা, কই যাও? খাঁড়াও। খাঁড়াও কইলাম। পাশের বাড়ির হোসেনের মাকে দেখে অনিচ্ছাসত্ত্বেও আকলিমাকে তার হাঁটার গতি কমাতে হলো। আকলিমা উত্তর দেয়, ‘খাঁড়ানের কাম নাই, বাড়ির থন আইছি, পোলাডারে চারডা খাওয়াইয়া আবার বিবি-সাবের বাড়ি যাইবার লাগছি। তোমার কী হইছে? ও মনে পড়ছে, তোমার ট্যাহা! দিমুনে, দিমুনে এই বিষ্যুৎবার দিমুনে। এইবার আর দেরি হইত না।'
কথা কয়টা বলেই আকলিমা আবার হনহন করে হেঁটে চলে যায়। প্রতিদিন ঠিক সকাল ৭টা আর বিকেলের পর তাকে দেখা যায় ঢাকা উদ্যানের বেড়িবাঁধ ধরে হেঁটে আসতে। এ হেঁটে চলা যেন নিরন্তর। জীবন যেমন থেমে থাকে না, এ হেঁটে চলারও যেন শেষ নেই। সেই কবে পদ্মার ভাঙনে সব হারিয়ে ঢাকার এই বস্তিতে এসে উঠেছিল দুই বছরের ছেলে বাবুলকে নিয়ে। তারপর থেকে এই ছুটে চলা। সারাদিন চার-পাঁচটা বাসায় কাজ করলেও এই ম্যাডামের বাসায় তাকে দিনে দুই বেলা হাজিরা দিতে হয়। সারা মাসে যা আয় করে তা দিয়ে ঘর ভাড়া দেওয়ার পর বেশির ভাগটাই চলে যায় বাবুলের পড়াশোনার পেছনে। স্বামী রিকশা চালিয়ে সারাদিনে যা আয় করে, দিন শেষে নেশা করে সেই টাকা নষ্ট করে ফেলে। ফলে তার সংসারে অভাব আর অশান্তি লেগেই আছে। কিন্তু আকলিমার স্বামী সবসময় এমন ছিল না। হাসিখুশি শান্ত স্বভাবের মানুষটা বাপ-দাদার ভিটে হারানোর পর কেমন যেন উদাস হয়ে যায়। ঢাকায় এসে একটা রিকশা জোগাড় করতে পারলেও কেমন যেন হয়ে গেল। এ ঢাকা শহরের বাতাস কেমন জানি আউলা-ঝাউলা। মানুষরে কেমন জানি বদলাইয়া দেয়... এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে আকলিমা সাদা রঙের বিশাল বাড়িটার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
অন্যদিনের মতো বাড়ির সব কাজ করতে করতে আকলিমার মনে হয়, এ বাড়ির সব কিছুই সুন্দর! মানুষগুলো, আসবাবপত্র, এমনকি বাড়ির টাইলস পর্যন্ত ঝকঝক করে। আকলিমা ভাবতে থাকে, 'যদি আমার বাবুলরে আমি লেখাপড়া শিখাইয়া অনেক বড় ডাক্তার বানাইবার পারতাম, তাইলে হয়তো ওর বাড়ির টাইলসও এইরাম ঝকমক করত।' কাজ করতে করতে আনমনা হয়ে যায় আকলিমা। হুঁশ ফেরে বাড়ির দারোয়ানের ডাকে, ‘কেডা জানি বাবুলের মার লগে দেহ্যা করতে আইছে। মনের মধ্যে কেমন জানি হঠাৎ কু-ডাক ডাকতে থাকে আকলিমার। দৌঁড়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে দেখে নিচে দাঁড়িয়ে আছে পাশের বাড়ির আমেনা। কেমন যেন ভয়ংকর, আতঙ্কিত চেহারা। আকলিমা আমেনার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কথা বলতে যেন ভুলে গেছে। আমেনা বলে ওঠে, 'বুবু, আমার লগে লও বাড়িতে যাই।' আকলিমার কোনো সন্দেহ থাকে না। নিশ্চয়ই খারাপ কোনো খবর। বিবি-সাহেবকে বলে আসার কথাও যেন সে ভুলে যায়। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে হঠাৎ দেখতে পায় এক দল মানুষের ভিড়। বাবুল দৌঁড়ে এসে মাকে আঁকড়ে ধরে বলে, 'মা, ওরা বাজানরে সাদা কাপড়ে...।' বাবুল কান্নার তোড়ে কথা শেষ করতে পারে না। আকলিমা যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে। সব কেমন জানি তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। আকলিমা বাবুলকে বুকের সঙ্গে আঁকড়ে ধরে। চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি ঝরতে থাকে তার। কী সান্তনা দেবে সে তার এই অবোধ শিশুকে। জ্ঞান হারানোর আগে সে আঁকড়ে ধরে তার শেষ সম্বল বাবুলকে ৷ বাবুলকে যে তার মানুষ করতেই হবে।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।
(ক) 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আবহমান বাংলাদেশ' বিষয়ে পিতা ও কন্যার সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) নিচের উদ্দীপক অনুসরণ করে একটি খুদে গল্প লেখ।
হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল। খালের ধারের আমগাছটার নিচে বসে আছে আয়মান। হঠাৎ পিছনে কারো পায়ের শব্দ শুনে চমকে উঠলো সে।....
(ক) 'নিরাপদ সড়ক চাই' বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত সংকেত অনুসরণে 'রক্তদানের পূণ্য' শিরোনামে একটি খুদেগল্প রচনা কর।
মহান শহিদ দিবসে শহিদ মিনারের পাদদেশে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ডা. সাদমান সেখানে উপস্থিত হলেন ...