১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) সাম্প্রতিক 'জঙ্গিবাদ' সমস্যা প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে একটি খুদেগল্প লেখো:
গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদুবাড়ি যায় অনিক। নদীতে ভাসমান নৌকা দেখে মুহূর্তে সে হারিয়ে যায় শৈশবের কোনো এক স্মৃতিতে .....
(ক) উত্তরঃ
শিক্ষার্থী : আসসালামু আলাইকুম স্যার।
শিক্ষক : ওয়ালাইকুম আসসালাম। কী খবর রাতুল? কেমন আছ?
শিক্ষার্থী : আমি খুব একটা ভালো নেই। একটা বিষয় নিয়ে আমি অনেক চিন্তিত। তাই আপনার সাথে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করতে এসেছি।
শিক্ষক : বসো, বসো। কী এমন বিষয় যার জন্য তোমার মন ভালো নেই? আমাকে খুলে বলো।
শিক্ষার্থী : স্যার, ইদানীং আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে আমি বেশ আতঙ্কিত। আমার তো মনে হচ্ছে দেশে থাকাটাই আর নিরাপদ না।
শিক্ষক : শান্ত হও রাতুল। আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। দেখ, এই জঙ্গিবাদ শুধু আমাদের দেশেরই সমস্যা না। এটা এখন সারা বিশ্বের সমস্যা। তাই তুমি এই দেশ ছেড়ে যেখানেই যাও সেখানেও তোমাকে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। টেলিভিশন আর সংবাদপত্রে ভূমি দেখোনি রোজই বিশ্বের কোথাও না কোথাও জঙ্গি হামলা হচ্ছে। দরিদ্র, উন্নয়নশীল কিংবা উন্নত- কোনো দেশই বাদ যাচ্ছে না এই জঙ্গি হামলা থেকে। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা আর আমাদের দেশের কথা না হয় বাদই দিলাম।
শিক্ষার্থী: কিন্তু স্যার এই জঙ্গিবাদ উত্থানের কারণ কী?
শিক্ষক : এটা তো এক কথায় বলা যাবে না। তবে আমার মনে হয়েছে বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের অপরাজনীতির ফসল এই জঙ্গিবাদ। তাছাড়া ধর্ম ও জাতীয়তা সম্পর্কে মানুষের উগ্র মনোভাব এবং জ্ঞানের অভাব এই জঙ্গিবাদ উত্থানের পেছনে প্রভাবকের ভূমিকা রাখছে।
শিক্ষার্থী : তাহলে কি আমরা এই জঙ্গিবাদের কাছে জিম্মি হয়েই থাকব?
শিক্ষক : না। আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় শুধু অভিযান পরিচালনাই জঙ্গিবাদ নির্মূল করার জন্য যথেষ্ট নয়।
শিক্ষার্থী : জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে আর কী করা যেতে পারে?
শিক্ষক: এ ব্যাপারে আমাদের নিজেদেরকেও সচেতন হতে হবে।
সুযোগসন্ধানীদের কোনো রকম ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অপব্যাখ্যায় প্রারোচিত না হয়ে সত্য ও সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তুমি হয়তো দেখেছ আমাদের দেশে যারা জঙ্গি হামলায় অংশ নিয়েছে তাদের অধিকাংশই তরুণ এবং শিক্ষার্থী। তাদের কেউই কিন্তু পেশাদার সন্ত্রাসী না। তারা ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় অনুপ্রাণিত হয়ে মিথ্যাকে সত্য ভেবে সেই 'সত্যে'র জন্য আত্মঘাতী হয়ে উঠেছে, জঙ্গি হয়ে উঠেছে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। আমাদের প্রতিবেশীদের সম্পর্কেও খোঁজ খবর রাখতে হবে। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে না থেকে সমাজে পরস্পরের সাথে পরস্পরের ওঠা-বসা, সামাজিকতা ও সহমর্মিতা এই জঙ্গিবাদ নির্মূল একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমার ধারণা।
শিক্ষার্থী : স্যার। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার সাথে কথা বলে আমার মন এখন অনেকটা শান্ত হয়েছে। আজ তাহলে চলি স্যার।
শিক্ষক : ঠিক আছে যাও। ভালো থেকো।
শিক্ষার্থী: খোদা হাফেজ।
শিক্ষক : খোদা হাফেজ।
(খ) উত্তরঃ
ছুটিতে দাদুবাড়ি এসেছে আনন্দ। পড়ন্ত বিকেলে সে দাঁড়ায় তার স্মৃতিবিজড়িত নদীটির তীরে। এই সেই নদী, যার তীরে কেটেছে তার শৈশবের বহু বিকেল। সে যখন স্কুলে পড়ত, তখন এই নদী তাকে যেন চুম্বকের মতো আকর্ষণ করত। প্রতিদিন বন্ধু বিনোদকে নিয়ে সে নদীর তীরে গিয়ে বসে থাকত। যদিও নদীটির একটি সর্বজন স্বীকৃত নাম আছে। কিন্তু আনন্দ তার একটি নাম রেখেছে- ময়ূরাক্ষী। তার স্বপ্নের এই ময়ূরাক্ষী নদী একই সঙ্গে তার বহু আনন্দ ও বহু বেদনার সাক্ষী হয়ে আছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষায় ফল খারাপ করার পর সে বাড়ি না গিয়ে এই নদীর তীরে এসে নীরবে অশ্রু বিসর্জন দিয়েছিল। একসময় বাবা তাকে খুঁজে পেয়ে আচ্ছা করে বকাবকি করেছিল। বাবার একটি কথা এখনও তার মনে পড়ে। খুব রেগে গিয়ে বাবা বলেছিলেন- 'বাদরামি করার আর জায়গা পেলি না। একে তো বাজে রেজাল্ট করলি, তার ওপর বাড়ি না ফিরে বাইরে গিয়ে হাওয়া খাচ্ছিস।' কথাটা মনে পড়লে আনন্দের হঠাৎ খুব হাসি পায়। এরপর সপ্তম শ্রেণিতে ভালো ফল করলে বন্ধুদের নিয়ে সে এই নদীর তীরে এসেই সেটা উদ্যাপন করেছিল। বন্ধুদের সবাইকে সে একটা করে মিষ্টি আর চকলেট খেতে দিয়েছিল। তারপর সবাই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্নান করেছিল। সঞ্জয় ছিল ওদের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্টু। বিনোদ স্নান করতে রাজি না হলে সে তাকে ধাক্কা দিয়ে জলে ফেলে দিয়েছিল। এই নদীর ঢেউ আনন্দকে অস্থির করে দেয়। সে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে ঢেউগুলো উঁচু নিচু হয়ে কেমন গড়িয়ে গড়িয়ে যায়। যেন বহমান জীবনেরই অনবদ্য প্রতীক সে। কখনো উত্থান কখনো পতন। নদীতে নৌকা নিয়ে মাঝিরা যখন ভেসে চলে তখন আনন্দ উদাস হয়ে কোনো সুদূর স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমায়। কখনো মালামাল নিয়ে, কখনো যাত্রী নিয়ে নৌকাগুলো যখন তীরে এসে ভিড়ে তখন অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি হয়। আনন্দের হৃদয় যেন লাফিয়ে ওঠে। আকাশের দিকে তাকিয়ে সে দেখতে পায় উড়ে যাচ্ছে কয়েকটি পাখি। সব যেন স্বপ্নের মতো। হঠাৎ কারো কণ্ঠস্বর শুনে সে স্বপ্নলোক থেকে বাস্তবে ফিরে আসে। তার দাদু তাকে বাসায় যেতে ডাকছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় আনন্দ দাদুর সঙ্গে বাড়ি ফিরে চলল।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক)
জ্ঞানচর্চায় বিজ্ঞানের ভূমিকা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপতৈরি কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'পানি-দূষণ' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:-
লঞ্চ ভ্রমণের সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে রাহাত বিস্মিত হয়।…………….
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।
(ক) সম্প্রতি সাফ গেমস ফুটবলে ব্যর্থতা নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'আমার শৈশব স্মৃতি' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:
হারানো সে দিনের কথা বলব কীরে হায়..........