বাংলাদেশ বিষয়াবলি
বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহা, ক্রমবিকাশমান স্বাধীনতার চেতনা, রাজনৈতিক সংঘটন, ১৯৪৭ইং হইতে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত এবং বিশেষভাবে ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ঘটনাপ্রবাহ সমন্বিত করে কীভাবে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলো তা বর্ণনা করুন।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস একটি দীর্ঘ এবং সংগ্রামী প্রক্রিয়া, যা ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এই ইতিহাসের প্রতিটি ধাপ স্বাধীনতার স্পৃহা, ক্রমবিকাশমান চেতনা, এবং রাজনৈতিক সংঘটন দ্বারা পরিপূর্ণ।
১৯৪৭-১৯৫২: ভাষা আন্দোলন
১৯৪৭: ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান এবং ভারত দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানের অংশ হয় এবং পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিতি পায়।
১৯৫২: উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রচেষ্টা পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করে। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ ঢাকার রাজপথে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। এই দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
১৯৫৪-১৯৭০: রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রাম
১৯৫৪: যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিপরীতে বিশাল বিজয় অর্জিত হয়। তবে খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় সরকার তা বাতিল করে।
১৯৫৬: পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
১৯৬৬: শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি পেশ করেন, যা পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ভিত্তি ছিল।
১৯৬৯: গণআন্দোলনে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের পতন ঘটে এবং ইয়াহিয়া খান নতুন প্রেসিডেন্ট হন।
১৯৭০-১৯৭১: স্বাধীনতার যুদ্ধ
১৯৭০: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করে।
১৯৭১:
৭ মার্চ: শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন, যেখানে তিনি স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ: পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে, যা ব্যাপক গণহত্যার সূচনা করে।
২৬ মার্চ: শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই দিনটি বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা:
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী মিত্রবাহিনী হিসেবে যুক্ত হয়।
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১: পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
উপসংহার:
বাংলাদেশের অভ্যুদয় একটি দীর্ঘ ও সংগ্রামী ইতিহাসের ফল। ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা অর্জন করে। এই সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহা ও চেতনার ক্রমবিকাশ ঘটেছে, যা অবশেষে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পথে পৌঁছেছে।
4o
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
জনগণের নেতা বলতে কী বোঝায়? বিশ্বের অন্য আরো অন্ততঃ ২ জন নেতার সাথে তুলনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জননেতা এবং সফল স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে বৈশিষ্ট্যের আলোচনা করুন।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে সুশীল সমাজের ভূমিকা আলোচনা করুন।
জনসংখ্যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পথে অন্যতম অন্তরায়-উক্তিটি সম্পূর্ণভাবে সঠিক? জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত 'সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী'। ব্যাখ্যা করুন।