আংশিক পাতন
দুইটি ভিন্ন স্ফুটনাংকের তরল পদার্থের মিশ্রনকে আলাদা করার প্রক্রিয়াকে কি বলে?
১. ছাঁকন (Filtration):
এটি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া যেখানে কঠিন কণাকে তরল বা গ্যাস থেকে আলাদা করা হয়। একটি ছাঁকনি (ফিল্টার) ব্যবহার করা হয় যা নির্দিষ্ট আকারের কণাগুলোকে আটকে রাখে এবং তরল বা গ্যাসকে এর মধ্য দিয়ে যেতে দেয়। যেমন, চা পাতা থেকে চা আলাদা করা হয়।
২. ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation):
কিছু কঠিন পদার্থ আছে যারা তাপ দিলে সরাসরি কঠিন থেকে গ্যাসে পরিণত হয়, তরলে পরিণত হয় না। এই প্রক্রিয়াকে ঊর্ধ্বপাতন বলে। এবং এই গ্যাসকে ঠান্ডা করলে আবার সরাসরি কঠিনে পরিণত হয়। যেমন, কর্পূর, নিশাদল (অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড) বা কঠিন কার্বন ডাই অক্সাইড (শুষ্ক বরফ) ঊর্ধ্বপাতিত হয়।
৩. পাতন (Distillation):
পাতন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি তরলকে বাষ্পে রূপান্তরিত করা হয় এবং তারপর সেই বাষ্পকে ঠান্ডা করে আবার তরলে ফিরিয়ে আনা হয়। এটি সাধারণত একটি তরল থেকে দ্রবীভূত কঠিন পদার্থকে আলাদা করতে বা এমন দুটি তরলকে আলাদা করতে ব্যবহৃত হয় যাদের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য অনেক বেশি। যেমন, লবণাক্ত পানি থেকে বিশুদ্ধ পানি তৈরি করা।
৪. আংশিক পাতন (Fractional Distillation):
আংশিক পাতন হলো পাতন প্রক্রিয়ার একটি বিশেষ রূপ যা দুটি বা ততোধিক তরল পদার্থের মিশ্রণকে আলাদা করতে ব্যবহৃত হয় যাদের স্ফুটনাঙ্কের পার্থক্য তুলনামূলকভাবে কম। এই প্রক্রিয়ায় মিশ্রণকে উত্তপ্ত করা হয় এবং নিম্ন স্ফুটনাঙ্কের তরলটি প্রথমে বাষ্পীভূত হয়। এই বাষ্পকে একটি ভগ্নাংশকারী কলাম (fractionating column) এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়, যেখানে এটি ঠান্ডা হয় এবং ঘনীভূত হয়ে আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হয়। এরপর উচ্চ স্ফুটনাঙ্কের তরলটি বাষ্পীভূত হয় এবং একইভাবে সংগ্রহ করা হয়।
দুইটি ভিন্ন স্ফুটনাঙ্কের তরল পদার্থের মিশ্রণকে আলাদা করার প্রক্রিয়া:
দুইটি ভিন্ন স্ফুটনাঙ্কের তরল পদার্থের মিশ্রণকে আলাদা করার জন্য আংশিক পাতন (Fractional Distillation) প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায়, মিশ্রণকে ধীরে ধীরে উত্তপ্ত করে নিম্ন স্ফুটনাঙ্কের তরলকে প্রথমে বাষ্পে পরিণত করা হয়। এই বাষ্প একটি আংশিক পাতন কলামের (fractionating column) মধ্য দিয়ে উপরে উঠে যায়, যেখানে এটি ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা হতে থাকে। কলামের বিভিন্ন উচ্চতায় তাপমাত্রা ভিন্ন হওয়ায়, নিম্ন স্ফুটনাঙ্কের উপাদানগুলো কলামের উপরের দিকে ঘনীভূত হয়ে তরলে পরিণত হয় এবং সংগ্রহ করা হয়। অন্যদিকে, উচ্চ স্ফুটনাঙ্কের উপাদানগুলো কলামের নিচের দিকে থাকে বা কম উপরে ওঠে। এভাবেই দুটি তরল পদার্থকে তাদের স্ফুটনাঙ্কের ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে পৃথক করা যায়। এই পদ্ধতিটি অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম থেকে পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন ইত্যাদি বিভিন্ন উপাদান আলাদা করতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই