১০ সারাংশ / ভাবসম্প্রসারণ
(ক) সারমর্ম লেখ:
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই- প্রীতি নেই-
করুণার আলোড়ন নেই-
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।
অথবা,
(খ) ভাব-সম্প্রসারণ কর:
স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে
সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।
(ক) উত্তরঃ
সারমর্ম: পৃথিবীতে এমন আলো বিরাজ করছে যারা দুশ্চরিত্রের তারা দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে অথচ সত্যিকারের জ্ঞানী-গুণীরা অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। সমাজের সর্বস্তরে দুশ্চরিত্র লোকেরাই সর্বেসর্বা কিন্তু জ্ঞানী-গুণীরা অবহেলিত। পৃথিবীর বৈষম্যময় সমাজ ব্যবস্থাই মূলত এর জন্য দায়ী।
(খ) উত্তরঃ
মূলভাব:
স্বীয় স্বার্থের গণ্ডিতে মানুষের জীবন হয়ে পড়ে নিষ্ফল। পক্ষান্তরে বৃহত্তর স্বার্থে আত্মনিয়ােগ করতে পারলে জীবন হয় সার্থক ও সফল।
সম্প্রসারিত ভাব:এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকা মানে কেবল শারীরিক অস্তিত্ব রক্ষা করা নয়। টিকে থাকা আর বাঁচারমধ্যে যােজন যােজন পার্থক্য রয়েছে। তেলাপােকা সৃষ্টির আদিকাল থেকে কোনাে ধরনের বিবর্তন ছাড়াই টিকে আছে।কূপমণ্ডুক নিরাপদে টিকে থাকে দিনের পর দিন। কিন্তু এদের এই টিকে থাকায় কোনাে সার্থকতা নেই। বরং মুক্ত আকাশে স্বাধীন প্রজাপতির রঙিন পাখা মেলে যে উড়াউড়ি, তা শুধু টিকে থাকাই নয়, বেঁচে থাকা – সার্থকতার সাথে বেঁচে থাকা।তার জীবন হয়তাে অত্যল্পকালের। কিন্তু বিশ্বের আর সকল কিছুর সাথে নিজেকে সার্থকভাবে মিলিয়ে নিয়ে সেই স্বল্পায়ু জীবনকেও সে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। একইভাবে মানুষের যথার্থ মনুষ্যত্বও ফুটে ওঠে নিজেকে সবার সাথে মিলিয়ে নেওয়ারমধ্যে, সবার মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে। কারণ জগতের নিয়মই হচ্ছে Live and let live. অর্থাৎ, দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে। বস্তুত এই বােধই মানুষের সমাজ বন্ধনের মূলসূত্র। স্বার্থলােলুপতা ও আত্মসুখপরায়ণতা মনুষ্যত্বের পরিপন্থী। জীবনে পরম সার্থকতা লাভের জন্য নিজের সুখ বা দুঃখকে মিথ্যা বলে বিবেচনা করতে হবে। স্বার্থপর ব্যক্তি বৃহত্তর জীবনাঙ্গন থেকে স্বেচ্ছানির্বাসিত। পৃথিবীর ভালাে-মন্দ, সুখ-দুঃখ, মঙ্গল-অমঙ্গল তার হৃদয় মন স্পর্শ করে না।তারা আপনাকে নিয়েই বিব্রত থাকে। মানব ধর্মের অবমাননাকারী এসব ব্যক্তি পৃথিবীর জঞ্জাল। তাদের বাঁচা মরা সমার্থক। কিন্তু যারা সত্যিকারের মানুষ তাঁরা স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেকে আচ্ছন্ন করে রাখেন না।
সিদ্ধান্ত :জীবন মানে বাইরের জগতের সাথে ভাব বিনিময়। পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার মাধ্যমে মানব জীবন। সার্থকতায় প্রােজ্জ্বল হয়ে ওঠে। নিজের দুঃখকে তুচ্ছ মনে করে অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়ােজিত করতে পারলেই জীবনসুখময় ও আনন্দময় হয়ে উঠবে। কবির ভাষায় বলা যায়,
“সবারে বাসলে ভালাে।নইলে মনের কালি ঘুচবে নারে।”
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) সারমর্ম লেখ:
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই- ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণ গগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে,
রহিনু পড়ি-
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
অথবা,
(খ) ভাব-সম্প্রসারণ কর: সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত।
(ক) সারাংশ লেখঃ
বর্তমান সভ্যতায় দেখি, এক জায়গায় একদল মানুষ অন্ন উৎপাদনের চেষ্টায় নিজের সমস্ত শক্তি নিয়োগ করেছে, আর এক জায়গায় আর একদল মানুষ স্বতন্ত্র থেকে সেই অন্নে প্রাণধারণ করে। চাঁদের একপিঠে অন্ধকার, অন্যপিঠে আলো- এ সেই রকম। একদিকে দৈন্য মানুষকে পঙ্গু করে রেখেছে অন্যদিকে ধনের সন্ধান। ধনের অভিমান, ভোগ-বিলাস সাধনের প্রয়াসে মানুষ উন্মত্ত, অন্নের উৎপাদন হয় পল্লিতে, আর অর্থের সংগ্রহ চলে নগরে। অর্থ উপার্জনের সুযোগ ও উপকরণ যেখানেই কেন্দ্রীভূত, স্বভাবতই সেখানে আরাম, আরোগ্য, আমোদ ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়ে অপেক্ষাকৃত অল্পসংখ্যক লোককে ঐশ্বর্যের আশ্রয় দান করে। পল্লিতে সেই ভোগের উচ্ছিষ্ট যা- কিছু পৌঁছায় তা যৎকিঞ্চিৎ।
অথবা,
(খ) ভাব-সম্প্রসারণ কর:
বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ এবং জীবনের সঙ্গে সম্পর্কহীন বিদ্যা পঙ্গু।
(ক) সারাংশ লেখ:
'মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত যে, সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্পির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িযা আছে। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী হইয়া উঠে, নিস্তব্ধতা ভাঙিয়া ফেলে, অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করিয়া একবারে বাহির হইয়া আসে। হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে মানবহৃদয়ের বন্যাকে বাঁধিয়া রাখিয়াছে।
অথবা,
(খ) ভাব-সম্প্রসারণ কর: স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।
(ক) সারমর্ম লেখ:
হে মহাজীবন, আর এ কাব্য নয়-
এবার কঠিন কঠোর গদ্য আনো
পদ-লালিত্য ঝংকার মুছে যাক,
গদ্যের কড়া হাতুড়িকে আজ হানো।
প্রয়োজন নেই কবিতার স্নিগ্ধতা-
কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি;
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়-
পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।
অথবা,
(খ) ভাব-সম্প্রসারণ কর:
পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।